দুর্গাপুরে হোজা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা

দুর্গাপুরে হোজা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা

দুর্গাপুরে হোজা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা
দুর্গাপুরে হোজা নদী দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা

দুর্গাপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুরে একমাত্র হোজা নদী আস্তে আস্তে দখলে ফলে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। দুর্গাপুরের বুক চিঁড়ে এঁকেবেঁকে বয়ে চলছে হোজা নদী, যা ঠেকেছে পদ্মা নদীর সাথে। পদ্মার শাখা নদী স্বরমঙ্গলা এবং দয়ার সম্মিলিত প্রবাহ ফলিয়ার বিলে পতিত হয়। এই বিল থেকে দয়া এবং স্বরমঙ্গলার মিলিত স্রোত হোজা নদী নামে প্রবাহিত হয়েছে। পরে নদীটি দুর্গাপুর থানার পলাশবাড়ী গ্রামের মধ্যদিয়ে পূর্বমুখী প্রবাহ পথে তিন কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। এরপর উত্তরমুখী হয়ে বর্ধনপুর, চৌপুকুরিয়া, সিংগা, দুর্গাপুর, পনানগর, দমদমা, চকপলাশী, গাংধোপাপাড়া, গন্ডগোহালি, গোবিন্দনগর হয়ে পুঠিয়ার কানাইপাড়ার মধ্যদিয়ে মুসা খান নদীতে পতিত হয়েছে।

একসময় এই নদীতে স্রোত, জলযান, আর মৎস শিকারে মুখরিত থাকতো। যা এখন দুর্গাপুরের ইতিহাসের পাতায়ই স্থান পাচ্ছে, বাস্তবে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। নদী দখলের মহা উৎসব চলছে, কেউ বানাচ্ছেন বাড়ি কেউ তৈরি করছেন ফসলী জমি আবারও পিলার তৈরি করে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। একাদশে নদীর প্রস্থ তিনভাগের ১ ভাগ দখল হয়ে গেছে। সবথেকে সংকটময় পরিস্থিতি দুর্গাপুর বাজারে, দুই পাশে নিয়মিত বিভিন্ন বর্জ্য, ময়লা মাটি ফেলে নীরবে ভরাট কার্যক্রম চলছে।

ব্রিজের নদীর জায়গায় দুইপাশে গড়ে উঠেছে মার্কেট, গোডাউন, বাড়ি, ফুটপাত দখল করে চলে তাদের কেনাবেচা, আবার মন্দির সম্পসারণের নামে প্রতি বছর নিয়মিত মাটি ফেলে মন্দির বাড়ানো হচ্ছে। নদী দখলকারীরা নদীকে গনিমতের মালে পরিণত করেছে, দখলের মহা উৎসব চালাচ্ছে। দেশের সবচেয়ে স্বাধীন অপরাধী এই নদীখেকোরা। দখলদারদের জানা আছে নদী দখল করার জন্য কোনো শাস্তি তাঁদের পেতে হবে না। খুব বেশি হলে, সরকারি টাকা খরচ করে, ডজন, ডজন সরকারি কর্মচারী মিলে দখল টুকু শুধু উচ্ছেদ করবে। এর চেয়ে আর বেশি কিছু নয়। শাস্তি হয় না বলেই দেশের বিভিন্ন নদনদী অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

আইনের প্রয়োগ করেও যে দেশে দুর্নীতি আটকানো যাচ্ছে না, সেই দেশে এমন অপরাধ করার পথ খোলা রাখা হয়েছে, যার কোনো শাস্তি নেই বললেই চলে। গত বছর জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন দেশের প্রায় অর্ধ লাখ দখলদারের তালিকা প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি দখল করে আছেন এসব অসাধু ব্যক্তি। তারপরও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

হোজা নদীর সম্পর্কে জেলে শামসুল সংবাদকর্মীদেরকে জানান, মুলত মাছ শিকার আমার পেশা। অভাব অনটন আমার নৃত্য সঙ্গী। হোজা নদী আমার আয়ের অন্যতম উৎস কিন্তু বর্তমনে নদীর অবস্থাই করুন। দেশী কিছু মাছ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়না। পাকিস্তান আমলে এক একটা গজাড় ৮/১০ কেজি ওজনের হতো, বোয়ালেরও সাইজ এমনই থাকতো। মাছের জন্য বিশী সময় অপেক্ষা করতে হতো না কুঁচ দিয়ে মাছ মারলেও দিনে ২০, ৩০ কোজি মাছ পেতাম। নদী তখন অনেক বড়ো আর স্রোত ছিলো। নিয়মিত দখল আর ভরাটের ফলে প্রায় মৃত।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহসীন মৃধা জানান, নদী সরকারি সম্পদ কোনো দখলদারকে ছাড় দেওয়া হবে না। দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের একটাই দাবী অবিলম্বে নদী খনন ও দখলমুক্ত করা হোক।

মতিহার বার্তা ডট কম: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply